Hacking কি? Hacker কারা? হ্যাকার কত প্রকার? (What is Hacking and Types of Hacker in Bangla)

Hacking কি? Hacker কারা? হ্যাকার কত প্রকার? (What is Hacking and Types of Hacker in Bangla)


Hacking কি? Hacker কারা? হ্যাকার কত প্রকার? (What is Hacking and Types of Hacker in Bangla) বুঝতে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে হ্যাকিং কি? আপনি সম্পূর্ণ ব্লগ পড়লেই বুঝতে পারবেন হ্যাকার কারা এবং এরা কত প্রকার?


types of hacker


হ্যাকিং কি এবং কাকে বলে? What is Hacking?


হ্যাকিং বলতে কারো সিস্টেমে অনুপ্রবেশ বুঝায় । হ্যাকিং বলতে ডেটা এবং সিস্টেমের উৎসগুলিতে অনুমোদিত অথবা অননুমোদিত অ্যাক্সেস পাওয়ার জন্য কোনও সিস্টেম বা কোনও নেটওয়ার্কের দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং এরপর তাদের এক্সেস করার প্রক্রিয়াকে বুঝায়। হ্যাকিংয়ের উদাহরণ: সিস্টেমের অভ্যন্তরে সঞ্চিত ডেটাতে অ্যাক্সেস পেতে ডিফল্ট পাসওয়ার্ডের দুর্বলতাটি প্রদর্শন করা।


হ্যাকার কারা? Who are the Hacker’s?


হ্যাকার বলতে সেই সকল মেধাবী এক্সপার্টদের বুঝায় যারা সিস্টেম সম্পর্কে উচ্চতর জ্ঞান রাখে এবং তারা তাদের অর্জিত জ্ঞান ব্যাবহার করে সিস্টেমের দুর্বলতা খুজে বের করতে পারে, অতঃপর তারা চাইলে সেই সিস্টেমকে ডেভেলপ করতে পারে অথবা এর ক্ষতিসাধন করতে পারে।


হ্যাকার কত প্রকার? Types of Hacker’s


হ্যাকার কত প্রকার, এটা নির্ভর করে হ্যাকিং এর প্রকৃতির উপরে। মূলত ৩ প্রকারের হ্যাকারের কথা সবাই বলে থাকে; (১) হোয়াইট হ্যাট অথবা এথিকাল হ্যাকার, (২) গ্রে হ্যাট হ্যাকার এবং (৩) ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার । কিন্তু এখন মাত্র এই ৩ প্রকারের মধ্যেই সবকিছু সীমাবদ্ধ নেই। প্রকারভেদ এবং প্রকৃতির উপর নির্ভর করে নিম্নে ১০ প্রকার হ্যাকার এর আলোচনা করা হল;


হোয়াইট হ্যাট অথবা এথিকাল হ্যাকারঃ White Hat Hacker’s


হোয়াইট হ্যাট হ্যাকাররা এথিকাল হ্যাকার নামেও পরিচিত। তারা কখনই কোনও অর্গানাইজেশন অথবা কোন বেক্তির ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং তারা সিস্টেমের পেন-টেস্টিং এবং দুর্বলতার খুজে বের করার অংশ হিসাবে কম্পিউটার বা কোনও নেটওয়ার্ক সিস্টেমে দুর্বলতাগুলি খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। হোয়াইট হ্যাট অথবা এথিকাল হ্যাকার কখনও কারো ক্ষতি করে না, তারা শুধুমাত্র দুর্বলতা খুজে বের করে।

এথিকাল হ্যাকিং অবৈধ নয় এবং এটি বাংলাদেশের আইটি শিল্পের জন্য অন্যতম চাহিদাযুক্ত কাজ। এমন অনেক সংস্থা রয়েছে যারা সিস্টেমের পেন-টেস্টিং এবং দুর্বলতার মূল্যায়নের জন্য হোয়াইট হ্যাট অথবা এথিকাল হ্যাকারদের চাকরী দিয়ে থাকে।


ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারঃ Black Hat Hacker’s


ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার, যারা ক্র্যাকার নামেও পরিচিত। যারা শুধুমাত্র নিজের লাভের জন্য যেকোন সিস্টেমে এক্সেস নেয় এবং এর থেকে তথ্য চুরি করে, তাদের ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার বলে। ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদের লক্ষ্য একটাই আর তা হচ্ছে “নিজের লাভ এবং অন্যের ক্ষতি”।

ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকিং সবসময় অবৈধ, কারণ এর খারাপ উদ্দেশ্যর মধ্যে রয়েছে অফিসিয়াল তথ্য চুরি করা, কারোও গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা, সিস্টেমের ক্ষতিসাধন করা, নেটওয়ার্ক যোগাযোগ অবরুদ্ধ করা ইত্যাদি।


গ্রে হ্যাট হ্যাকারঃ Grey Hat Hacker’s


গ্রে হ্যাট হ্যাকার আসলে এথিকাল হ্যাকিং এবং ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকিং এর একটি মিশ্রণ মাত্র। যারা বাউন্টি অথবা কিছু উপার্জনের আশায় সিস্টেমের মালিককে না জানিয়েই সিস্টেমের দুর্বলতা খুজে বেড়ায় এবং দুর্বলতা পাবার পর সেটি সেই সিস্টেমের মালিককে জানায় এবং তার থেকে কিছু টাকা উপার্জন করে থাকে, তাদেরকেই গ্রে হ্যাট হ্যাকার বলে।

বর্তমান সময়ে গ্রে হ্যাট হ্যাকারদের সংখ্যা সব থেকে বেশি কারন পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে এরা অনেক সময় নিজের অজান্তেই ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার হয়ে যায় আবার অনেক সময় নিজের অজান্তেই এথিকাল হ্যাকার হয়ে যায়। যদি উদাহরণ দেয়া হয় তবে আপনি “সাপ” এর মতন মনে করতে পারেন কারন সাপ আপনার কখনই ক্ষতি করবে না, যদিনা আপনি তাকে পূর্বে আক্রমন না করেন।


রেড হ্যাট হ্যাকারঃ Red Hat Hacker’s


রেড হ্যাট হ্যাকার আসলে সেই একইভাবে এথিকাল হ্যাকিং এবং ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকিং এর একটি মিশ্রণ মাত্র। কিন্তু এদের মূল লক্ষ্য থাকে সরকারী এজেন্সিগুলো, দেশের টপ লেভেল সিক্রেট তথ্যগুলো এবং রাজনৈতিক তথ্যগুলো লিক করা।

রেড হ্যাট হ্যাকিং একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করার জন্য এদের সরবচ্চ শাস্তি হয়ে থাকে।


ব্লু হ্যাট হ্যাকারঃ Blue Hat Hacker’s


ব্লু হ্যাট হ্যাকার মূলত তাদের বলা হয় যারা আইটি সিকিউরিটি ফার্মগুলোতে পেন-টেস্টার অথবা বাউন্টি হান্টার হিসাবে কাজ করে। এদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে সিস্টেম সিকিউরিটির লুপহোল খুজে বের করা, অর্থাৎ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার যেন সিস্টেমের ক্ষতি না করতে পারে তাই ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদের অনুপ্রবেশের পূর্বেই তাদের ধরা এবং বাধা দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তৈরি করা।

ব্লু হ্যাট হ্যাকারদের চাহিদা সব থেকে বেশি, এমনকি সকলের প্রিয় মাইক্রোসফট কর্পোরেশনও এই “ব্লু হ্যাট” বিষয় নিয়ে তাদের সেমিনারে আলোচনা করে এবং এই ব্লু হ্যাট হ্যাকারদের জন্য বিভিন্ন কম্পিটিশন এরেঞ্জ করে থাকে এবং ফলশ্রুতিতে ব্লু হ্যাট হ্যাকারদের বিভিন্ন জব অফার দিয়ে থাকে।


কান্ট্রি স্পন্সরড হ্যাকারঃ Country Sponsored Hacker’s


পৃথিবীর যেসকল দেশ নিজেদের সাইবার নিরাপত্তার উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে, সেসকল দেশ নিজেরাই বিভিন্ন সাইবার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এবং সে প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নিয়ে একটি সংগঠন তৈরি করে, এই সংগঠনকেই কান্ট্রি স্পন্সরড হ্যাকার টিম বলা হয়ে থাকে। অনেক সময় এই প্রতিযোগিতা পুরোপুরি গোপনীয় ভাবে করা হয় যেন, জনসম্মুখে এই হ্যাকাররা না আসে এবং এতে তাদের পরিচয় গোপন রাখা হয়।

কান্ট্রি স্পন্সরড হ্যাকারদের মূলত গোল্ডেন হ্যাট হ্যাকার’ও বলা হয়ে থাকে এবং এই টিমকে কন্ট্রোল করে সেই দেশেই আর্মি অথবা ডিফেন্সের কোন গোপনীয় সংগঠন। জনসম্মুখে এদের কোন কার্যকলাপ দেখা না গেলেও, দেশের জন্য প্রান দিতেও এরা প্রস্তুত থাকে।


এলিট হ্যাকারঃ Elite Hacker’s


এলিট হ্যাকার মূলত তারাই, যারা নিজেদের স্কিল অথবা অর্জিত জ্ঞান প্রমানের লক্ষ্যে নিজেরাই বিভিন্ন এক্সপ্লইট (নিজের তৈরি কোড অথবা সফটওয়্যার) তৈরি করে থাকে এবং নিজেরাই নিজেদের মধ্যে তুলনামূলক প্রতিযোগিতা করে থাকে। এলিট হ্যাকাররা মূলত সোশ্যাল মিডিয়াতেই সব থেকে বেশি প্রতিযোগিতা করে থাকে এবং এলিট হ্যাকারদের অনেক কোম্পানি স্পোন্সারও করে থাকে।


স্ক্রিপ্ট কিডিঃ Script Kiddie’s


স্ক্রিট কিডি তারাই, যারা মূলত অন্যের তৈরি করা বিভিন্ন স্ক্রিপ্ট অথবা কোড অথবা এক্সপ্লয়েট ব্যাবহার করে হ্যাকিং করে থাকে। স্ক্রিপ্ট কিডিদের নন-এক্সপার্ট হ্যাকারও বলা হয় কারন এরা অন্যের টুলস ব্যাবহার করে সিস্টেম হ্যাকিং অথবা নেটওয়ার্ক অনুপ্রবেশ করে থাকে। স্ক্রিপ্ট কিডিদের হ্যাকিং সম্পর্কে ধারণা কম থাকায়, এরাই সব থেকে বেশি প্রশাসনের নজরে চলে আসে।

স্ক্রিপ্ট কিডিদের পেন-টেস্টিং এবং বাগ বাউন্টি সম্পর্কে বিশেষ কোন ধারণা থাকে না তাই স্ক্রিপ্ট কিডিদের ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি থাকে।


নিউ’বি হ্যাকারঃ Noob Hacker’s


হ্যাকিং জগতে একদম নতুন ভাবে যারা প্রবেশ করে তাদের সবাইকেই নিউ’বি হ্যাকার বলা হয়। নিউ’বি হ্যাকারদের হ্যাকিং সম্পর্কে তেমন কোন বিশেষ জ্ঞান থাকে না, এক কোথায় হ্যাকিং এর প্রথম সিঁড়ি বলতে যা বুঝায় আরকি। নিউ’বি হ্যাকারদের আবার নুব হ্যাকার অথবা গ্রীন হ্যাট হ্যাকারও বলা হয়।

নুব হ্যাকার শব্দটি নিউ’বি হ্যাকারদের জন্য খুব প্রচলিত একটি নাম। এই নুব হ্যাকাররাই পরবর্তীতে বিভিন্ন হ্যাকিং প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নিজেদের লক্ষ্য তৈরি করে থাকে। নুব হ্যাকাররা অনলাইনে বিভিন্ন কোর্স করেও নিজেদের দক্ষতা বাড়িয়ে থাকে।


হ্যাঁক্টিভিস্টঃ Hacktivist


হ্যাঁক্টিভিস্ট বলতে তাদের বুঝায়, যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে পছন্দ করে। এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে হলে এভাবে বলা যায় যে, সমাজে অনেক অনৈতিক কাজ হয়, আবার সরকার অথবা কোন প্রভাবশালী বেক্তি দ্বারা যদি কেউ নির্যাতিত হয় তবে একদল হ্যাকার এর প্রতিবাদ করে থাকে। এই দলটি সাধারনত নিজের দেশেই বেশি কাজ করে থাকে।

সামাজিক নৈতিকতা বৃদ্ধি, ধর্মীয় অনুপ্রেরনা এবং রাজনৈতিক বিষয়য়েই এই দলটি প্রধানত কাজ করে থাকে। এই দলটি প্রধানত ডিডস অ্যাটাক সব থেকে বেশি ব্যাবহার করে থাকে। নিজের দেশকে লক্ষ্য করে অন্য কোন দেশ অপমান জনিত কোন কথা বললে এই দলটি ডিডস অ্যাটাকের মাধ্যমে উপযুক্ত জবাব দিয়ে থাকে। হ্যাকটিভিস্ট মূলত কোন গ্রুপ না, যে কোন প্রকারের হ্যাকার’ই এই সংগ্রামী কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে।



অবশেষে বলতে পারি


মূলত এই হল প্রধান কিছু হ্যাকার এর প্রকারভেদ। সাধারনত এই ১০ প্রকারেই হ্যাকারদের ভাগ করা হয়ে থাকে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড অথবা সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত এই ১০ প্রকারের হ্যাকার প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও কিছু ভিন্ন প্রকারের হ্যাকার রয়েছে যেমন ফ্রন্ট হ্যাকার, লিড অথবা লিট হ্যাকার, সুইসাইডাল হ্যাকার ইত্যাদি কিন্তু এগুলো এখনও সর্বজনীনভাবে স্বীকৃতি অর্জন করেনি তাই এদের এই লিস্টে রাখা হয়নি। অন্যকোন দিন এদের নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং এই আর্টিকেল থেকে নতুন কিছু শিখে থাকলে আমাদের সাপোর্ট করুন।


আরও পড়ুন;















Close Menu