Hacking এবং Cracking এর পার্থক্য কি? Hacking Vs Cracking in Bangla

Hacking এবং Cracking এর পার্থক্য কি? Hacking Vs Cracking in Bangla


Hacking এবং Cracking শব্দ দুইটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা, এই Hacking এবং Cracking এর আসল কিছু পার্থক্য কি কি? তাই, ব্লগের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো, Hacking এবং Cracking এর পার্থক্য কি? অর্থাৎ, Hacking vs Cracking in Bangla .

hacking-vs-cracking-in-bangla

Hacking vs Cracking বুঝার জন্য আমার একটা নিজস্ব মত নিয়ে আলোচনা করবো। আমি আমার মতামতের ব্যাখ্যা দিলেই আপনি Hacking এবং Cracking এর পার্থক্য কি? সেটা বুঝে যাবেন। এমনকি, Hacker এবং Cracker -দের আলাদা ভাবেই দেখবেন আপনি। প্রথমে আপনি Hacking সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন এবং Cracking সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন। আশা করি, আপনি ২ টি আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং Hacker এবং Cracker -দের সম্পর্কে জেনে গিয়েছেন। আসুন, এবার আমার মতামতের উপর যুক্তি তুলে ধরি।

“”সকল HACKER’ই CRACKER কিন্তু সকল CRACKER'ই HACKER না””

এটা আমার নিজের মতামত, কিন্তু আপনি আমার সাথে একমত নাও হতে পারেন। এখন আমি আমার মতামতের উপর যুক্তি দিচ্ছি। আপনি আমার HACKING কি আর্টিকেল পড়লেই বুঝে যাবেন যে HACKER কারা? যদি একদম সংক্ষেপে একলাইনে বলি, তবে এমন দ্বারায় “টেকনোলোজিতে বিশেষ জ্ঞান যারা রাখে তারাই Hacker হওয়ার যোগ্যতা রাখে”। বিশেষ জ্ঞান বলতে যেনতেন জ্ঞান না আবার, ডিপলি নলেজ আরকি। এখন সে ভালো কাজে ব্যাবহার করলে সে White Hat Hacker, এবং খারাপ কাজে ব্যাবহার করলে সে Black Hat Hacker। আপনাকে HACKER হতে হলে অনেক কিছুর উপর জ্ঞান থাকতে হবে, যেমন বিভিন্ন ল্যাংগুয়েজের কোডিং, সকল প্রকার ওয়েবসাইট তৈরি এবং ডেভেলপ, সফটওয়্যার লাইফ-সাইকেল, সফটওয়্যার বাগ ফাইন্ডিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, ইন্টারনেট অফ থিংস ইত্যাদি ইত্যাদি। এখন আপনি যদি আমাদের দেশের সো-কোল্ড Hacker -দের Hacker বলে থাকেন তবে সেটা তো আপনার ভুল। Hacker হতে হলে আপনাকে অনেক এক্সপার্ট হতে হবে যেমন কেভিন মিটনেক, জনাথন জেমস ইত্যাদি। আমি আমার দেশকে ছোট করছি না, কিন্তু আফসোস এইযে, আমার দেশের আসল Hacker'রা এখনও লুকিয়ে কাজ করে, প্রকাশে না। আর যাদের প্রকাশে দেখতে পাচ্ছেন তারা Hacker নামের কলঙ্ক। এখন আপনি একটু ভেবে দেখুন, যে মানুষ টেকনোলোজিতে বিশেষ জ্ঞান রাখে সেই Hacker কিনা। এখন চলুন আরেকটু এগিয়ে যাই, যে আপনার সিস্টেমকে হ্যাক করতে পারবে সেকি আপনার সকল একাউন্ট হাতিয়ে নিতে পারবে না? সেকি সফটওয়্যার এর বাগ বের করে, সেটাকে বাইপাস করে, পেইড সফটওয়্যার ফ্রিতে সবাইকে দিতে পারবে না? আমি আশা করি, আপনিও আমার সাথে একমত, হ্যাঁ সে পারবে। তার মানে কি সব Hacker’ই Cracking পারবে না? অবশ্যই পারবে। তাই, আমি বলতে পারি “সকল Hacker’ই Cracker”।

Hacking কেন Cracking থেকে আলাদা?


আমি আপনাকে আরেকটু বুঝিয়ে বলি তবে আমি আশা করি আপনি এই ব্যাপারে আরেকটু ক্লিয়ার হবেন। মনে করুন একজন HACKER, সে ব্ল্যাক হ্যাট হোক অথবা সে হোয়াইট হ্যাট হোক, সে আপনার কম্পিউটার কে হ্যাক করলো। এখন হ্যাক করার পরে অবশ্যই সে আপনার ব্রাউজারে সেইভ থাকা সকল পাসওয়ার্ড পেয়ে যাবে। শুধু তাই না, আপনার উইন্ডোজে সেইভ থাকা সকল পাসওয়ার্ডও সে পেয়ে যাবে। অর্থাৎ, সে আপনার কম্পিউটারটি হ্যাক করার পরে আপনার পাসওয়ার্ড গুলো হাতিয়ে নিতে পারে। শুধু তাই না, সেই HACKER চাইলে আপনাকে মনিটর করতে পারে এবং দেখা যায় আপনি যে পাসওয়ার্ডগুলো অথবা যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো আপনার কম্পিউটারে এবং ব্রাউজারে সেইভ করে রাখেননি, সে আপনাকে প্রতিনিয়ত মনিটর করার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আপনার এই তথ্যগুলো সে হাতিয়ে নিতে পারবে অথবা যেটা আপনি সহজ ভাষায় বলতে পারেন যে, সে একাউন্টগুলো ক্রেক করতে পারবে। এখন কথা হচ্ছে যে, আপনি অবশ্যই বুঝতে পাচ্ছেন, একজন HACKER চাইলে আপনার অ্যাকাউন্ট গুলো ক্র্যাক করতে পারে। তাই এখানে প্রমান হচ্ছে যে, সকল HACKER'ই CRACKING করতে পারবে।

আমি আপনাকে আরেকটা উদাহরণ দিচ্ছি, মনে করুন একজন ওয়েবসাইট HACKER বা বাগ-বাউন্টার যদি ওয়েবসাইট এক্সেস নেয় তবে সেই ক্ষেত্রে সেই ওয়েবসাইট এক্সেস করার জন্য তার অনেক নলেজ এর প্রয়োজন হবে। তাকে HTML, CSS, JavaScript, jQuery সহ আরও কোডিং সম্পর্কে জানতে হবে। সে বাগ-বাউন্টি করার পরে অথবা সে ওয়েবসাইট হ্যাক করার পরে, চাইলেই সে সেই ওয়েবসাইটের অ্যাকাউন্টগুলির তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে। এখন সে যদি তথ্যগুলো হাতিয়ে না নিয়ে ওয়েবসাইটের দুর্বলতা সম্পর্কে এর মালিককে জানায় তবে সে হোয়াইট হ্যাট HACKER, নতুবা যদি সকল তথ্য নিজের কাছে রেখে দেয় তবে সে ব্ল্যাক হ্যাট HACKER। আমি যেটা বুঝাতে চাচ্ছি সেটা হলো, একজন HACKER ওয়েবসাইট হ্যাক করার পরে সে চাইলেই কিন্তু সকল অ্যাকাউন্টের তথ্য Cracking করতে পারবে। তাই এখানেও প্রমান হচ্ছে যে, HACKER চাইলেই CRACKING করতে পারে।

এখন যদি সফটওয়্যার এর ব্যাপারে আসি, সফটওয়্যার বাগ বাউন্টির জন্য আপনাকে কোডিং এর অনেক ডিপ নলেজ রাখতে হবে, যেমন C, C++, Java, Python, Perl ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। শুধু তাই না, আপনাকে Assembly Language সহ Software Development Life Cycle (SDLC) সম্পর্কেও বিস্তারিত ধারণা রাখতে হবে। একটা সফটওয়্যার তৈরি করার Planning থেকে শুরু করে Submission করা পর্যন্ত সকল প্রসেস সম্পর্কে একজন হ্যাকারের ধারণা থাকতে হবে। তবেই, সে একজন ভালো সফটওয়্যার বাগ-বাউন্টার হতে পারবে। অর্থাৎ, আপনি খুব সহজেই বুঝতে পাচ্ছেন যে, একজন HACKER সফটওয়ারের বাউন্টি সম্পর্কে Coding থেকে শুরু করে Graphical User Interface (GUI) সহ সকল ধারণা যদি সে রাখে, তবে সে চাইলেই সফটওয়্যার Cracking করতে পারবে। সেটা সফটওয়্যার এর License Key হোক অথবা সফটওয়্যার এর Product ID হোক। এখন সেই HACKER চাইলেই কিন্তু সেই পেইড সফটওয়্যারের License Key অথবা এটার Mod ভার্সন অথবা এর Product ID পাবলিক করে দেয়ার মাধ্যমে সফটওয়্যার কোম্পানির ক্ষতি করতে পারবে। এখন আমি ক্ষতির ব্যাপারে আসছি না, আমি যেটা বুঝাতে চাচ্ছি সেটা হল, একজন HACKER চাইলেই Cracker এর ভুমিকা পালন করতে পারে।

আমি আপনাকে এমন আরো অনেক উদাহরন দিতে পারবো, যেখানে আমি খুব সহজে প্রমাণ করতে পারবো, একজন HACKER চাইলেই CRACKING করতে পারে অর্থাৎ সকল HACKER -কেই আপনি মূলত CRACKER বলতে পারেন। তো এখানেই প্রমাণ হচ্ছে যে, “সকল HACKER'ই CRACKER”।

Cracking কেন Hacking থেকে আলাদা?


এখন আসি Cracking প্রসঙ্গে। কেন সকল CRACKER, HACKER না? এর উত্তর আমি আপনাকে খুবই সংক্ষেপে এবং খুবই সহজে দিবো। কারন, এটা বিস্তারিত আলোচনা করার মতন কোন বিষয় না। প্রথমে আসি Password Cracking এর উদাহরণে, PASSWORD CRACKING এর জন্যে শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট টুলস অথবা সফটওয়ার ব্যবহার করলেই হয়ে যায়। অনলাইনে লিক হওয়া একাউন্ট-ডাটাবেজ ব্যবহার করার মাধ্যমে খুব সহজেই বিভিন্ন Checker দিয়ে চেক করে আপনি পাসওয়ার্ড CRACKING করতে পারেন। সেই একইভাবে একাউন্ট CRACKING এর জন্যও অনলাইনের ডাটাবেজ থেকে অথবা আপনার নিজস্ব কালেক্ট করা ডাটাবেজ ব্যবহার করে আপনি একাউন্ট Cracking করতে পারেন। এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু টুলস এবং সফটওয়ার আপনি পাবলিকলি এবং প্রাইভেটলি পেয়ে যাবেন।

যদি SOFTWARE CRACKING এর কথা বলি, তবে সেই একইভাবে কিছু নির্দিষ্ট টুলস অথবা সফটওয়ার আছে, যেগুলো আপনি ব্যাবহার করলেই অটোমেটিক CRACKING (নরমাল সফটওয়্যারগুলো) হয়ে যায়। এই সকল টুলসের কাজ একটাই, Jump Start এর মাধ্যমে Bypass করা অথবা Assembly এক্সেসের মাধ্যমে License Key or Product ID বের করা। একজন ১০ বছরের বাচ্চাকেও, যদি এই টুলস অথবা সফটওয়্যারগুলি কিভাবে ব্যবহার করে, তা শেখানো যায়? তবে সেও পাসওয়ার্ড CRACKING, একাউন্ট CRACKING এবং সফটওয়্যার Cracking করতে পারবে।

Cracking এর ১০০ ভাগের মধ্যে ৮৫ ভাগ এখনো সফটওয়্যার এবং টুলস ব্যবহার করার মাধ্যমেই হয়ে থাকে। অর্থাৎ Cracking এখন বেশিরভাগ সফটওয়্যার এবং টুলস এর উপরই নির্ভরশীল। তাই, শুধুমাত্র CRACKING এর জন্য আপনার এই সকল সফটওয়্যার এবং টুলস ব্যবহার করা জানলেই হবে, HACKING এর মতন ডিপ নজেল রাখার প্রয়োজন নেই। আর ডিপ নলেজ না থাকার কারণেই সকল CRACKER'রা HACKING করতে পারে না। তাই সহজেই বলা যায়, “সকল CRACKER'ই HACKER না”।

সবশেষে

আমি এটাই বলতে পারি, পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে Hacking -কে আপনি ভালো কাজ অথবা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলতে পারেন কিন্ত Cracking সব সময় শাস্তিযোগ্য অপরাধ'ই থাকবে। কারো বাসায় অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা এবং তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করা, দুইটাই আলাদা বিষয়। আশা করি, আপনি Hacking এবং Cracking এর পার্থক্য বুঝে গিয়েছেন। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং অন্য ব্লগে নতুন কিছু নিয়ে আমি দ্রুত হাজির হব, আল্লাহ্‌ হাফেজ।


আরও পড়ুন;














Close Menu