Cracking কি? Cracking কত প্রকার? (Types of Cracking in Bangla)

Cracking কি? Cracking কত প্রকার? 

(Types of Cracking in Bangla)


এই ব্লগে আমরা জানবো, Cracking কি? Cracking কত প্রকার? অর্থাৎ Types of Cracking in Bangla । এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়লেই আপনি বুঝতে পারবেন, Cracking কি এবং Cracking কত প্রকার? এবং Cracking সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন। তো, চলুন শুরু করা যাক।


what is cracking in bangla


Cracking কি?


Cracking -এই শব্দটি এসেছে কেমিক্যাল মিশ্রণ থেকে অর্থাৎ রসায়ন এর একটি অংশ মাত্র। সাইবার সিকিউরিটিতে Cracking শব্দের মূল অর্থ এখনও প্রকাশ করা হয়নি, কথাটি একটু আজব শুনলেও এটাই সত্য। আপনি আমার সাথে একমত নাও হতে পারেন কিন্তু আমি আপনাকে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারবো যে, আপনি গুগলে অথবা ইউটিউবে ২৪/৭ ঘাটার পরেও সাইবার সিকিউরিটিতে Cracking এর মূল শাব্দিক অর্থ খুজে পাবেন না। কিন্তু কিছু ইউটিউব ভিডিও অথবা কিছু আর্টিকেল পাবেন, যেখানে Cracking শব্দের ধারণা দেয়া হয়েছে মাত্র। আসল কথা হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি অথবা ইথিকাল হ্যাকিং‘এ Cracking এর পূর্ণ শব্দের অর্থ আপনি খুজে পাবেন না। কারন এটা এখনও অফিসিয়ালি প্রকাশ করা হয়নি। আমরা যারা সাইবার সিকিউরিটি অথবা ইথিকাল হ্যাকিং শিখতে আগ্রহ প্রকাশ করি, তারাই নিজেরা বুঝার জন্য এই CRACKING শব্দটি ব্যাবহার করে থাকি। Cracking বলতে আমরা বিভিন্ন কিছু বুঝি যেমন Account Cracking, Password Cracking, Software Cracking, Hardware Cracking ইত্যাদি ইত্যাদি এবং ইত্যাদি। সুতরাং আমি শুধু এগুলো আলোচনা করবো।

Cracking বলতে আমরা কি বুঝি?


এখন আমি আলোচনা করবো, Cracking বলতে আমরা কি বুঝি? Cracking বুঝার আগে আপনাকে হ্যাকিং সম্পর্কে জানতে হবে। হ্যাকিং সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন। আশা করি, আপনি হ্যাকিং সম্পর্কে জেনে গিয়েছেন। এখন একটি উদাহরণ দিলেই আপনি Hacking এবং Cracking এর পার্থক্য বুঝতে পারবেন।

উদাহরণঃ মনে করুন একজন আপনার কম্পিউটার অথবা মোবাইল হ্যাক করলো, এটা হ্যাকিং। এখন, সেই হ্যাকার যদি আপনার ফেসবুক সহ সকল সোশ্যাল মিডিয়ার পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নেয়, তবে সেটা Cracking । এটাকে মূলত Password Cracking বলে। আবার, সেই হ্যাকার যদি কোন পেইড সফটওয়্যার এর লাইসেন্স বাইপাস করে, সেটা হবে Software Cracking । এভাবে, বিভিন্ন কাজে Cracking এর অর্থও বিভিন্ন হয়। তো বুঝতেই পাচ্ছেন, কেনও সাইবার সিকিউরিটি অথবা ইথিকাল হ্যাকিং‘এ Cracking এর মূল অর্থ খুজে পাওয়া যায়না।

হ্যাকিং’কে যদি আপনি অপরাধ মনে করেন তবে Cracking আরও এক্ট্রিম লেভেল এর অপরাধ। কারো পাসওয়ার্ড বের করা, কারো একাউন্টকে নিজের বলে দাবী করা, কারো একাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া ইত্যাদি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আপনি Cracking’কে অনলাইন ডাকাতি বললেও ভুল হবে না। তাই, আপনি শুধু এডুকেশনাল অথবা শিক্ষার জন্য Cracking সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন কিন্তু কারো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে যদি আপনি এটা ব্যাবহার করেন তবে সেটার দ্বায়ভার শুধুমাত্র আপনাকেই বহন করতে হবে। তো চলুন, এখন আলোচনা করি, Cracking কত প্রকার এবং কি কি?

Cracking কত প্রকার এবং কি কি?


types of cracking in bangla


Cracking সম্পর্কে ধারণাতো পেলেন’ই। তাই, এখন আমরা জানবো, Cracking কত প্রকার এবং কি কি? সাধারনত, Cracking’কে আপনি চাইলে অনেক ভাগেই ভাগ করতে পারেন কিন্তু আপাতত সাইবার সিকিউরিটি অথবা ইথিকাল হ্যাকিং’এ Cracking’কে ০৩ (তিন) ভাগে ভাগ করা হয়।

Password Cracking


Password Cracking বলতে বুঝায় পাসওয়ার্ড চুরি করা। এই পাসওয়ার্ড Cracking বুঝার জন্য আমি আপনাকে সহজ আরও তিনটি উদাহরণ দিবো, তবে আপনি পাসওয়ার্ড Cracking কি? সেটা বুঝে যাবেন।

প্রথমত, আমাদের কম্পিউটারে অনেক পাসওয়ার্ড আমরা নিজেরাই সেইভ রাখি। আবার, আমাদের ব্যাবহার করা ব্রাউজার নিজেই আমাদের অনেক পাসওয়ার্ড সেইভ করে রাখে। এখন কোন হ্যাকার আপনার কম্পিউটার হ্যাক করার পর যদি ব্রাউজার থেকে পাসওয়ার্ড চুরি করে তবে সেটাকে আপনি পাসওয়ার্ড Cracking বলতে পারেন। আবার, হ্যাকার যদি আপনার কম্পিউটার হ্যাক করার পর CMD থেকে আপনার কানেক্টেড অথবা সেইভ থাকা ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড চুরি করে তবে সেটাও আপনি Password Cracking’ই বলবেন। আবার, কোন হ্যাকার যদি আপনার সিস্টেম হ্যাক করার পর Rainbow Table থেকে hash করা সিস্টেম লগিন পাসওয়ার্ড চুরি করে, অর্থাৎ আপনি আপনার কম্পিউটার লগিন করার সময় যে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করেন, সেটা যদি সেই হ্যাকার নিয়ে নেয় তবে সেটাও Password Cracking এর মধ্যেই পরে।

দ্বিতীয়ত, মনে করুন কোন ক্রেকার অনলাইনে লিক হওয়া ১০,০০০,০০ (দশ লক্ষ) ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড এর একটি Combo list জোগাড় করলো। সেই Combo list -এ Gmail, Yahoo Mail সহ আরও বিভিন্ন মেইল সার্ভিস দেয়ার Combo list আছে। Combo list বলতে ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড এর সংমিশ্রণ বুঝায় (abcdefg@abc.com:aeiou) । সে এই সম্পূর্ণ কম্বো লিস্টকে একটি নির্দিষ্ট সফটওয়্যার ব্যাবহার করে বিভিন্ন অনলাইনে কেনাবেচার ওয়েবসাইট’এ লগিন করার চেষ্টা করলো, যেমন PayPal, Amazon ইত্যাদি। দেখা যাবে, এই দশ লক্ষ লিস্টের মধ্যে অনেক আইডি লগিন হয়ে যাবে। সেই ক্রেকার সেই আইডিতে লগিন করে আসল ইউজার এর সকল টাকা হাতিয়ে নিতে পারে। এটাকেও Password Cracking অথবা একাউন্ট Cracking বলে। আমি আশা করি, আপনি বুঝতেই পাচ্ছেন, কেনও আমি Cracking'কে হ্যাকিং থেকেও বড় অপরাধ বলেছি।

তৃতীয়ত, কমবেশি সকল ইন্টারনেট ইউজাররা আজকাল ওয়েবসাইট থেকে কেনাবেচা করে আবার ওয়েবসাইটেই সকল তথ্য জমা রাখে। এখন সেই ওয়েবসাইট যদি হ্যাক হয় এবং সেই ওয়েবসাইট এর ডাটাবেজ যদি লিক হয়, যেমন ওয়েবসাইট এর সকল ইউজারদের ইউজার এবং পাসওয়ার্ড, তবে এটাকেও Password Cracking অথবা Account Cracking বলে। যদি ডাটাবেজ লিক নাও করা হয় তবুও কিন্তু একজন হ্যাকার চাইলেই সেই তথ্য ব্যাবহার করে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারে, এটাকেও Password Cracking অথবা Account Cracking বলে। আবার ওয়েবসাইট থেকে কোন হ্যাকার যদি Cookie বের করে এবং সেই Cookie ব্যাবহার করে অন্যের একাউন্টকে নিজের আয়ত্তে নেয় তবে সেটাও Password Cracking অথবা Account Cracking। Cookie বলতে আমরা যখন আমাদের ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড কোন ওয়েবসাইটে সেইভ করি, সেটা সেই ওয়েবসাইটে Cookie আকারেই সেইভ হয়।

তো, উপরের তিনটি উদাহরণ থেকেই আপনি বুঝতে পাচ্ছেন যে, Password Cracking কি? এই Password Cracking কেও আবার অনেক ভাগে ভাগ করা হয়েছে। অনেক ভাগ বলতে, বর্তমানে কি কি উপায়ে আপনার পাসওয়ার্ডগুলি একজন Cracker (যে Cracking করে) পেয়ে থাকে সেটা আরকি। আমি পাসওয়ার্ড Cracking এর উপায়গুলো নিয়ে অন্য কোন ব্লগে আলোচনা করবো, কিন্তু আজ শুধু নামগুলো বলে দিচ্ছি।

  • ফিশিং অ্যাটাক
  • সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাটাক
  • ম্যালওয়্যার অ্যাটাক
  • ব্রুটফোর্স অ্যাটাক
  • ডিকশনারি অ্যাটাক
  • মাস্ক অ্যাটাক
  • রেইনবো টেবিল অ্যাটাক
  • নেটওয়ার্ক এনালাইজার অ্যাটাক
  • স্পাইডারিং অ্যাটাক
  • অফলাইন Cracking অ্যাটাক
  • সোল্ডার সার্ফিং অ্যাটাক এবং
  • গেইজিং অথবা ঝড়ে বক মারা

সাধারনত, উপরের এই ১২ উপায়ে Password Cracking অথবা Account Cracking সব থেকে বেশি হচ্ছে। আপনি যেভাবেই Cracking করেন না কেনও, সেটা উপরের এই ১২ অ্যাটাকেই পড়বে। আর আমি উপরের এই ১২ অ্যাটাক নিয়ে অন্য কোন ব্লগে আলোচনা করবো।

Software Cracking


Software Cracking বলতেও অনেক কিছু বুজায়, আমি একেক করে আপনাকে উদাহরণ সহকারে বুঝিয়ে বলছি। যদি কোন Software -এ কোন Cracker এক্সট্রা কোন Option যুক্ত করে অথবা কোন Option বাতিল করে, তবে এটাকে আপনি Software Cracking বলতে পারেন। আবার, কোন ক্রেকার যদি কোন পেইড সফটওয়ারের Patch অথবা Keygen তৈরি করে, যেন সেই Patch অথবা Keygen রান করলেই পেইড সফটওয়ারের License Key আর কিনতে না হয়। তবে, সেটাকেও আপনি Software Cracking বলতে পারবেন। আবার কোন Cracker যদি ডাইরেক্টলি সফটওয়ারে কোন মডিফাই না করে সেই সফটওয়ারের Loader তৈরি করে, যেন সেই Loader সেই সফটওয়্যারের সিকিউরিটি ব্লক করে দেয়। তবে, সেই Cracker সেই সফটওয়্যারের অনেকগুলো কপি তৈরি করতে পারে, এটাকেও আপনি Software Cracking বলতে পারবেন। Software Cracking মূলত ৪টি ধাপের উপরেই বেশি নির্ভর করে। সেগুলো হচ্ছে Modify, Keygen, Patch এবং Loader । এমন না যে, এগুলোর মধ্যেই সে সীমাবদ্ধ। আরও অনেক প্রসেস অথবা ধাপ রয়েছে, সেগুলো আমি অন্য কোন ব্লগে আলোচনা করবো, ইনশাআল্লাহ্‌।

Network Cracking


Network Cracking বলতে যদি কেউ Local নেটওয়ার্কের সিকিউরিটি ব্রেক করে সেই সম্পূর্ণ নেটওয়ার্কের আয়ত্ত নিতে পারে, তবেই সেটাকে আমরা Network Cracking বলবো। Network Cracking এর সবথেকে সহজ উদাহরণ হচ্ছে ওয়াইফাই হ্যাক। অবশ্য, শুধুমাত্র ওয়াইফাই হ্যাক’ই সম্পূর্ণ Network Cracking না, আমি আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে ছোট্ট একটি উদাহরণ দিলাম আরকি। Network System অনেক বড় একটি বিষয়। মনে করুন, আপনার কাছে একটি অত্যাধুনিক Firewall যুক্ত একটি আধুনিক নেটওয়ার্ক রয়েছে। এখন, বাইরে থেকে কেউ একজন আপনার নেটওয়ার্ক সিগন্যাল ব্যাবহার করে আপনার নেটওয়ার্কে যদি প্রবেশ করে, তবেই সেটা Network Cracking । Network Cracking করে সে আপনার সিস্টেমের অনেক তথ্যই নিতে পারে, এমনকি ওয়্যারলেস অ্যাটাকের মাধ্যমে সে আপনার নেটওয়ার্কে থাকা সকল ইউজারদের তথ্যও নিয়ে নিতে পারে। এই সকল অ্যাটাককেই সাইবার সিকিউরিটিতে Network Cracking বলে। আরও অনেক প্রসেস অথবা ধাপ রয়েছে, সেগুলো আমি অন্য কোন ব্লগে আলোচনা করবো, ইনশাআল্লাহ্‌।

আমি আশা করি

আজকের ব্লগ থেকে আপনি Cracking কি এবং কত প্রকার, তার সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। কতটুকু বুঝাতে পেরেছি তা জানি না, কিন্তু সহজ বাংলায় উদাহরণ দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। আমি আবারও বলছি Cracking আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আপনি Cracking’কে অনলাইন ডাকাতি বললেও ভুল হবে না। তাই, আপনি শুধু এডুকেশনাল অথবা শিক্ষার জন্য Cracking সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন কিন্তু কারো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে যদি আপনি এটা ব্যাবহার করেন তবে সেটার দ্বায়ভার শুধুমাত্র আপনাকেই বহন করতে হবে। পরবর্তী ব্লগে আবার দ্রুত হাজির হবো, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ্‌ হাফেজ।


আরও পড়ুন;














Close Menu