Card Fraud কি? Card Fraud কত প্রকার? Types of Card Fraud in Bangla

Card Fraud কি? Card Fraud কত প্রকার? Types of Card Fraud in Bangla


Card Fraud অথবা কার্ড জালিয়াতি, বর্তমানে আমাদের দেশে খুব আলোচিত একটি বিষয়। Card Fraud কি এবং কত প্রকার তা নিয়েই আজ বিস্তারিত আলোচনা করবো। অর্থাৎ, Types of Card Fraud in Bangla । আমি হলপ করে বলতে পারি, আপনি আজ অনেক কিছুই নতুন শিখবেন।

types of card fraud in bangla


Card Fraud অথবা কার্ড জালিয়াতি কি?


Card Fraud অথবা কার্ড জালিয়াতি বা ক্রেডিট কার্ড ফ্রড বা কার্ডিং কি? তা জানতে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে ব্যাংক কার্ড কি? ব্যাংক কার্ড, ব্যাংক থেকেই দেয়া হয়। ব্যাংক এর গ্রাহকরা তাদের ডিপোজিটরি একাউন্ট যেন অনলাইন অথবা অফলাইনে ব্যাবহার করতে পারে সেজন্য ব্যাংক থেকেই এই কার্ড সুবিধা দেয়া হয়। অনলাইন কেনাকাটা বলতে, অনলাইন ওয়েবসাইট থেকে যদি কেউ কিছু কিনতে চায় তবে সেই কার্ড এর তথ্য ব্যাবহার করে সেটা কিনতে পারবে। কার্ড ব্যাবহার করে দেশে এবং বিদেশেও অনলাইন মার্কেটিং অথবা কেনাকাটা করা যায়। অফলাইনে বলতে, আপনি আপনার দেশের কোন সুপারশপ অথবা কোন মার্কেট থেকে কোন পণ্য কিনলে, সেখানে যদি কার্ড দিয়ে পেমেন্ট এর সুবিধা থাকে তবে আপনি নগদ টাকা প্রদান না করেই, ব্যাংক এর কার্ড ব্যাবহার করে পেমেন্ট করতে পারবেন। শুধু তাই না, আপনি আপনার ব্যাংক এর কার্ড ব্যাবহার করে যেকোন এটিএম বুথ থেকে আপনার প্রয়োজনীয় টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। সাধারনত, অনলাইনে ও অফলাইনে কেনাকটা এবং যেকোন সময় এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন এর জন্যই ব্যাংক কার্ড এর চাহিদা অনেক বেশি। বর্তমান সময়ে, আমরা যারা ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করি, আমাদের অনেকেরই এই ব্যাংক কার্ড রয়েছে। তো, আশা করি আপনি বুঝতে পেয়েছেন যে ব্যাংক কার্ড কি?

এখন বলি কার্ড জালিয়াতি কি? আপনি যেহেতু ব্যাংক কার্ড সম্পর্কে জেনেছেন তাই কার্ড জালিয়াতি বুঝতে আপানার অনেক সুবিধা হবে। আপনি ব্যাংক থেকে যে কার্ড নিলেন, সেই কার্ড এর তথ্য ব্যাবহার করে যদি অন্য কেউ অনলাইন থেকে কেনাকাটা করে তবেই তাকে কার্ড জালিয়াতি অথবা কার্ডিং বলে। এমনও হতে পারে যে, আপনার কার্ড হারিয়ে গেছে, সেই হারিয়ে যাওয়া কার্ড ব্যাবহার করে যদি কেউ অফলাইনেও কেনাকাটা করে, তবুও সেটাকে কার্ড জালিয়াতি অথবা কার্ডিং বলে। এখন প্রযুক্তি অনেক উন্নত, তাই আপনার কার্ডের তথ্য ব্যাবহার করে আপনার কার্ডের মতন দেখতে অন্য কার্ড বানানো যায় (আজকাল অনলাইনেই ব্লাঙ্ক কার্ড কিনতে পাওয়া যায়, সেই ব্লাঙ্ক কার্ডে আপনার কার্ডের তথ্য সফটওয়ারের মাধ্যমে বসানো যায়) এবং সেই কার্ড ব্যাবহার করে যদি কেউ কেনাকাটা করে, তাকেও কার্ড জালিয়াতি বা কার্ডিং বলে। যারা এই কার্ড জালিয়াতি বা কার্ডিং করে, তাদের সাইবার সিকিউরিটির ভাষায় কার্ডার (Carder) বলা হয়। আশা করি, কার্ড জালিয়াতি বা কার্ডিং কি? সেটা আপনার কাছে পরিষ্কার হয়েছে।

কার্ড জালিয়াতি কত প্রকার? Types of Card Fraud in Bangla


কার্ড জালিয়াতি বা কার্ডিং কত প্রকার তা বলা মুশকিল কারন শতশত উপায়ে এই কার্ড জালিয়াতি বা কার্ডিং করা হচ্ছে। কিন্তু তবুও, প্রধানত ৫ টি উপায়ে কার্ড জালিয়াতি করা হয়। এমননা যে, এই ৫ টি উপায়ের মধ্যেই কার্ড জালিয়াতি সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে কিন্তু এই ৫ টি উপায়কেই প্রধান উপায়ে বিবেচনা করা হয়।

কার্ড নট প্রেজেন্ট ফ্রড


কার্ড নট প্রেজেন্ট বলতে, বাস্তবিক অর্থে কার্ড কার্ডারের কাছে নেই বুঝায়। ব্যাপারটা আমি আরও পরিষ্কার করে বলছি। মনে করুন কোন ওয়েবসাইট থেকে অথবা অন্য যেকোন উপায়ে হউক, আপনার কার্ডের তথ্য লিক হল বা প্রকাশ পেলো। সেই তথ্য ব্যাবহার করেই একজন কার্ডার অনলাইন থেকে যা ইচ্ছা তাই কিনতে পারবে। তবে ভেবে দেখুন, কার্ডার এর কাছে কিন্তু আপনার কার্ড নেই, তবুও সে আপনার কার্ডের তথ্য ব্যাবহার করেই কেনাকাটা করতেছে। একেই মূলত, কার্ড নট পেজেন্ট ফ্রড বলে। শুধুমাত্র ২০১৯ সালে এই কার্ড নট প্রেজেন্ট ফ্রড পদ্ধতিতেই কার্ডিং এর শিকার হয়ে পুরো বিশ্বে ১,২৫,৩৪,৪৫,৫৩,২৯৯.২১ টাকার (বাংলাদেশী টাকা) কার্ড জালিয়াতি হয়েছে (সুত্রঃ ইনভেস্টোপিডিয়া) ।

কাউন্টারফিট এন্ড স্কিমিং ফ্রড


কাউন্টারফিট এন্ড স্কিমিং ফ্রড বলতে, চোম্বকীয় কোন ডিভাইস অথবা ম্যাগনেটিক চিপ সেট করে গ্রাহকের কার্ডের তথ্য চুরি বুঝায়। ব্যাপারটা আমি আরও পরিষ্কার করে বলছি। মনে করুন আপনি কোন মার্কেট থেকে কেনাকাটা করলেন, কেনাকাটার পর আপনি অফলাইনে কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করার জন্য পজ (অফলাইনে পেমেন্ট করার ডিভাইস) করলেন, কিন্তু আপনি নিজেও জানলেন না যে সেই পজ মেশিনেই একজন হ্যাকার খুবই ছোট একটা চোম্বকীয় ডিভাইস বা ম্যাগনেটিক চিপ সেট করে রেখেছিল। সেই চিপের কাজ হল, আপনার কার্ডের চিপ থেকে সকল তথ্য নিয়ে নেয়া। আজকাল বাজারে এমন অনেক ম্যাগনেটিক চিপ কিনতে পাওয়া যায়, যা ব্যাবহার করে কার্ডাররা কার্ডিং করে থাকে। এটা শুধুমাত্র যে মার্কেটেই করা হয় তা না, অনেক এটিএম মেশিনেও আজকাল হ্যাকাররা এমন ম্যাগনেটিক চিপ সেট করে রাখে যেন কেউ এটিএম থেকে টাকা তুলতে আসলে তার ব্যাংক কার্ডের সকল তথ্য তারা পায়। শুধুমাত্র ২০১৯ সালে এই কাউন্টার এন্ড স্কিমিং ফ্রড পদ্ধতিতেই কার্ডিং এর শিকার হয়ে পুরো বিশ্বে ৬৭,৯৮,৭৩,৯৭,৯২১.৩৭ টাকার (বাংলাদেশী টাকা) কার্ড জালিয়াতি হয়েছে (সুত্রঃ ইনভেস্টোপিডিয়া) ।

লস্ট এন্ড স্টোলেন কার্ড ফ্রড


লস্ট এন্ড স্টোলেন কার্ড ফ্রড বলতে, আপনার কার্ড যদি হারিয়ে যায় অথবা চুরি হয়, আর সেই কার্ড ব্যাবহার করে যদি কেউ কেনাকাটা করে তবে তাকে লস্ট এন্ড স্টোলেন কার্ড ফ্রড বলে। আমি মনে করি এটা নিয়ে বিস্তারিত বলার কিছু নেই কারন আপনি সহজেই বুঝে গেছেন যে, লস্ট এন্ড স্টোলেন কার্ড ফ্রড কি? এর থেকে বাচার জন্য আপনার কার্ড হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে, সাথে সাথে ব্যাংকে কল করে সেই কার্ডটি ইনভেলিড করে দিবেন, যেন কেউ আর আপনার কার্ড ব্যাবহার করে কিছুই কেনাকাটা করতে না পারে। শুধুমাত্র ২০১৯ সালে এই লস্ট এবং স্টোলেন কার্ড ফ্রড পদ্ধতিতেই কার্ডিং এর শিকার হয়ে পুরো বিশ্বে ৩৯,৬১,৫৪,৯৬,৭৩২.৮৮ টাকার (বাংলাদেশী টাকা) কার্ড জালিয়াতি হয়েছে (সুত্রঃ ইনভেস্টোপিডিয়া) ।

কার্ড নেভার এরাইভড ফ্রড


কার্ড নেভার এরাইভড ফ্রড বলতে, ব্যাংক কার্ডের এপ্লিকেশন করার পর যদি কার্ড গ্রাহক হাতে পৌছার পূর্বেই চুরি হয় এবং সেই কার্ডের তথ্য যদি কেউ ব্যাবহার করে তবে তাকে কার্ড নেভার এরাইভড ফ্রড বলে। আমি বিষয়টা বুঝিয়ে বললে আপনি খুব সহজেই বুঝেবন। ব্যাংকে কার্ডের জন্য এপ্লিকেশন করলে ব্যাংক সেই কার্ডটি অবশ্যই গ্রাহকের কাছে তার ঠিকানাতেই পৌঁছে দেয়। এখন সেই কার্ডটি গ্রাহকের হাতে পৌছার পূর্বেই যদি লেটারবক্স থেকে অথবা কুরিয়ার থেকে কেউ চুরি করে এবং সে যদি কার্ডের সকল তথ্য ব্যাবহার করে কেনাকাটা করে, তবে সেটাকেই কার্ড নট এরাইভড ফ্রড বলে। শুধুমাত্র ২০১৯ সালে এই কার্ড নট এরাইভড ফ্রড পদ্ধতিতেই কার্ডিং এর শিকার হয়ে পুরো বিশ্বে ২৭,৮৮,৬৪,৮১,২১১.১৩ টাকার (বাংলাদেশী টাকা) কার্ড জালিয়াতি হয়েছে (সুত্রঃ ইনভেস্টোপিডিয়া) ।

ফলস এপ্লিকেশন কার্ড ফ্রড


ফলস এপ্লিকেশন কার্ড ফ্রড বলতে, ব্যাংক কার্ডের এপ্লিকেশন করার পর, যদি কার্ড তার কাছে পৌঁছায়নি বলে কোন হ্যাকার সেই কার্ডের তথ্য ব্যাবহার করে কেনাকাটা করে, তবে তাকে কার্ড নেভার এরাইভড ফ্রড বলে। আমি বিষয়টা আরও ক্লিয়ার করে দেই। ব্যাংকে কার্ডের জন্য এপ্লিকেশন করলে ৯৯.৯৯% সঠিকভাবে ব্যাংক সেই কার্ডটি গ্রাহকের কাছে অবশ্যই পৌঁছে দেয় এবং মেইলে সকল তথ্য সেন্ড করে দেয়। এখন কোন হ্যাকার যদি অন্য কারো তথ্য ব্যাবহার করে ব্যাংক কার্ডের এপ্লিকেশন করার পর সেই কার্ড তার কাছে পৌছায়নি বলে অস্বীকার করে এবং মেইলে সেন্ড করা কার্ডের সকল তথ্য ব্যাবহার করে কেনাকাটা করে তবে সেটাকেই ফলস এপ্লিকেশন কার্ড ফ্রড বলে। আবার, সেই হ্যাকার ব্যাংক কার্ড হাতে নেয়ার পরেও যদি কার্ড সে পায়নি বলে অস্বীকার করে, তবুও তাকে ফলস এপ্লিকেশন কার্ড ফ্রড বলা হয়। কারন, সে অন্যের তথ্য দিয়েই ব্যাংক থেকে কার্ড নিয়েছে। শুধুমাত্র ২০১৯ সালে এই ফলস এপ্লিকেশন কার্ড ফ্রড পদ্ধতিতেই কার্ডিং এর শিকার হয়ে পুরো বিশ্বে ১৯,২৬,৩৭,২১,৬৮৪.৮৩ টাকার (বাংলাদেশী টাকা) কার্ড জালিয়াতি হয়েছে (সুত্রঃ ইনভেস্টোপিডিয়া) ।


আমি আশা করি 

Card Fraud অথবা কার্ড জালিয়াতি বা ক্রেডিট কার্ড ফ্রড বা কার্ডিং কি এবং Card Fraud কত প্রকার? (Types of Card Fraud in Bangla) তা বুঝেছেন। আমি আবারও বলছি, কার্ড জালিয়াতি বা কার্ডিং মারাত্মক একটি অপরাধ। তাই, কার্ডিং থেকে দূরে থাকুন কিন্তু আপনি কিভাবে কার্ডিং এর শিকার হতে পারেন তা জেনে রাখুন। যদি এই আর্টিকেল থেকে আপনি কিছু শিখে থাকেন তবে অবশ্যই আমাকে সাপোর্ট করুন এবং নতুন আরটিকেলের জন্য অপেক্ষা করুন, ধন্যবাদ, আল্লাহ্‌ হাফেজ।


আরও পড়ুন;














Close Menu